কাজে ফিরলেন রোজিনা

কাজে ফিরলেন রোজিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২১, ২১: ৩৮

 

অ+অ-

 

অনেক দিন পর নিজ ডেস্কে বসেন তিনি। এ সময় সহকর্মীরা তাঁকে শুভেচ্ছা জানান।

অনেক দিন পর নিজ ডেস্কে বসেন তিনি। এ সময় সহকর্মীরা তাঁকে শুভেচ্ছা জানান।ছবি: প্রথম আলো

নিজ কর্মস্থলে কাজে ফিরলেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। দীর্ঘদিন পর তাঁকে কাছে পেয়ে সহকর্মীরা ফুল ও করতালি দিয়ে স্বাগত জানান। সবার সঙ্গে তিনি কথা বলছেন প্রাণখুলে। সবশেষে বসলেন নিজ কম্পিউটারের সামনে। ফিরে এলেন সাংবাদিকতায়, নিজ কাজের জায়গায়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৫০ দিন পর প্রিয় কর্মস্থলে ফিরলেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। প্রথম আলো কার্যালয়ে প্রবেশের সময় তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান হেড অব রিপোর্টিং টিপু সুলতান ও সহকর্মীরা। কারওয়ান বাজার, ঢাকা।

৫০ দিন পর প্রিয় কর্মস্থলে ফিরলেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। প্রথম আলো কার্যালয়ে প্রবেশের সময় তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান হেড অব রিপোর্টিং টিপু সুলতান ও সহকর্মীরা। কারওয়ান বাজার, ঢাকা।ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

৫০ দিন পর আজ বুধবার বিকেলে নিজ কর্মস্থলে ফিরলেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। কর্মস্থলের জ্যেষ্ঠ সহকর্মীরা তাঁর খোঁজখবর নেন। সহকর্মীদের প্রত্যাশা, সামনের দিনগুলোতে রোজিনা ইসলাম আরও ভালো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করবেন।

গত ১৭ মে পেশাগত দায়িত্ব পালনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। সেখানে প্রায় ছয় ঘণ্টা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পর তাঁকে শাহবাগ থানায় পাঠানো হয়। সে রাতেই মামলা দেখিয়ে পরদিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

রোজিনা ইসলামকে আটক, নির্যাতন, মামলা ও কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় দেশের সাংবাদিক সমাজ সরব হয়। তাঁর মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তাঁর ওপর নির্যাতনকারীদের বিচারের দাবিতে দেশজুড়ে সাংবাদিকেরা প্রতিবাদ ও আন্দোলন করেছেন। গত ২৩ মে রোজিনা ইসলামের জামিন হয়। ২৩ মে বিকেলেই গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। এরপর তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

বিজ্ঞাপন

কার্যালয়ের সভাকক্ষে জেষ্ঠ সহকর্মীদের ফুলের শুভেচ্ছা।

কার্যালয়ের সভাকক্ষে জেষ্ঠ সহকর্মীদের ফুলের শুভেচ্ছা।ছবি: প্রথম আলো

আজ বিকেলে কর্মস্থলে ফিরলে রোজিনা ইসলামকে সহকর্মীরা ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। এরপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রথম আলো কার্যালয়ের সভাকক্ষে। সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সভা হয়। সভায় প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, রোজিনাকে আটক, নিগ্রহ ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় কেবল সাংবাদিকেরা নন, অন্য পেশার মানুষও প্রতিবাদ করেছেন, রোজিনার প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়েছেন, পাশে দাঁড়িয়েছেন। এটা অসামান্য একটা ঘটনা।

প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক বলেন, রোজিনা ফিরে এসেছেন, এটা আনন্দের উপলক্ষ। এটা প্রথম আলো ও সাংবাদিকতার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। রোজিনা আরও ভালো প্রতিবেদন করলে দেশের মানুষ খুশি হবে।

প্রথম আলোর ফিচার সম্পাদক সুমনা শারমীন বলেন, ‘আমরা আশায় থাকলাম প্রথম আলোতে আবার রোজিনার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দেখা যাবে। আরও ভালো প্রতিবেদন করবেন তিনি।’

সহকর্মী ও সাংবাদিক সমাজের প্রতি নিজের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রোজিনা ইসলাম।

সহকর্মী ও সাংবাদিক সমাজের প্রতি নিজের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রোজিনা ইসলাম।ছবি: প্রথম আলো

রোজিনা ইসলাম এ সময় সহকর্মীদের সঙ্গে তাঁর এ অভিজ্ঞতার কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। ওই ছয় ঘণ্টায় আমাকে যে অত্যাচার করেছে, সারা জীবন এমন অত্যাচার হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘এ দিনটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম, কবে কাজে ফিরব।’

রোজিনা ইসলাম বলেন, ‘৫০ দিন পর আমি আমার প্রিয় কর্মস্থল প্রথম আলোতে এসেছি। আমি আমার প্রাণের সহকর্মীদের কাছে ফিরে এসেছি। আমি স্বস্তি বোধ করছি। আমার সহকর্মীদের ভালোবাসায় আমি আবেগতাড়িত। আমি কৃতজ্ঞ। আমি আনন্দিত।’

রোজিনা ইসলাম বলেন, ‘দুঃসহ দিনগুলোতে আমার প্রতিষ্ঠান প্রথম আলো সর্বদা আমার পাশে থেকেছে, সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে, সাহস জুগিয়েছে। পাশাপাশি দেশের সাংবাদিক সমাজ, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন, পাঠক, বন্ধু, শুভানুধ্যায়ীরা যে সহমর্মিতা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাতে আমি অভিভূত ও কৃতজ্ঞ।’

পরে রোজিনা ইসলাম সহকর্মীদের সঙ্গে তাঁর নিজ বসার স্থান প্রথম আলো কার্যালয়ের দ্বাদশ তলায় যান। সেখানে সহকর্মীরা করতালি দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। তিনি নিজের আসনে বসেন, কম্পিউটার খোলেন। সহকর্মীরা সবাই তাঁকে ঘিরে জড়ো হন। আবারও তাঁকে ফুল দেওয়া হয়, বই উপহার দেন কেউ কেউ।